সজীবের মৃত্যু নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে। সজীবের এই অকাল মৃত্যুতে সজীবের পরিবার এবং এলাকাবাসি অভিযোগের আঙ্গুল তুলেছে, স্থানীয় প্রশাসনের দিকে। তারা মনে করছেন, স্থানীয় সবুজ ছাতা ক্লিনিকের ভবণ নির্মাণে স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগীতায় ঠিকাদার কর্তৃক বালি উত্তোলনের ফলে এইরূপ গর্তের সৃষ্টি হয়েছে । এলাকাবাসীর দাবী, ঐ গর্ত দ্রুত ভরাট না করা হলে, এমন অনাকাংঙ্খিত মৃত্যু আরোও হতে পারে। তাই, এলাকাবাসীর দাবী এবং অভিযোগের প্রেক্ষিতে স্থানীয় প্রশাসনের পক্ষে আমাদের “বীরগঞ্জ নিউজ ২৪”-এর মুখোমুখি হয়েছেন জনাব কে.এম. কুতুব উদ্দিন, চেয়ারম্যন, ৩নং শতগ্রাম ইউনিয়ন পরিষদ, বীরগঞ্জ, দিনাজপুর। বীরগঞ্জ নিউজ ২৪-এর সাথে একান্ত সাক্ষাৎকার দিয়েছেন। সাক্ষাৎকারের পূর্ন অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
বীরগঞ্জ নিউজ ২৪: কেমন আছেন?
কে.এম.কুতুব উদ্দিন: আলহামদুলিল্লাহ্, ভালো আছি।
বীরগঞ্জ নিউজ ২৪: পানিতে ডুবে সজীবের মৃত্যু নিয়ে এলাকায় ব্যাপক চাঞ্চল্যের সৃষ্টি হয়েছে, ব্যাপারটা আপনি কিভাবে দেখছেন?
কে.এম.কুতুব উদ্দিন: আসলে যেটা অপমৃত্যু, সেটা প্রত্যেকেই চাঞ্চল্যকর ভাবেই নেয়। অপমৃত্যুটা কাম্য নয়। আমরাও সেভাবে ব্যথিত। আসলে অপমৃত্যুটা কখনোই মেনে নেওয়ার মত নয়।
বীরগঞ্জ নিউজ ২৪: সজীবের বাবার সাথে কথা বলে জানতে পেরেছি, উনি স্থানীয় প্রশাসনের সহযোগীতায় বালি উত্তোলনের ফলে সৃষ্ট গর্তের কারনেই তার ছেলের এমন অকাল মৃত্যু হয়েছে বলে দাবী করেছেন। আপনিও কি তাই মনে করেন?
কে.এম. কুতুব উদ্দিন: না। এটা আসলে যুক্তি সঙ্গত কারন না, এজন্যেই যে, যখন বন্যা দূর্গত অবস্থা ছিলো তখন হাটু পানিতে পরেও একটা ছোট বাচ্চা মারা গেছে রাঙ্গালিপাড়ায়। আবার ঢেপা ব্রীজের ওখান থেকে পরেও মানুষ মারা গেছে। বন্যার পানি, গর্ত, উঁচা যায়গা ভেদে মানুষ মারা যায় না । যে বাচ্চাগুলা মারা গেছে সবাই উঁচু এলাকার বাসিন্দা, অথচ নদীর ধারে যাদের বাড়ি সেখানকার একটা বাচ্চা-কাঁচ্চাও মারা যায় নাই। বরাবরই দেখা যাচ্ছে, যে এলাকার মানুষ জন কখনোই বন্যা দেখে নাই, পানি দেখে নাই, সেই সব এলাকার বাচ্চা-কাচ্চাই পানিতে পরে মারা যাচ্ছে। স্রোতের নদীতে কেউ যদি সাতার না জেনে যায় সেখানেও মানুষ মারা যেতে পারে। এটা তো ছোট্ট একটা বাচ্চা। এখানে গর্ত কোন বিষয় না।
বীরগঞ্জ নিউজ ২৪: এলাকাবাসীর সাথে কথা বলে জানা গেছে। তারা আশংকা করছেন, এই গর্ত যদি দ্রুত ভরাট করার ব্যবস্থা না নেওয়া হয় কিংবা সেটাকে যদি বিপদ জনক এলাকা হিসেবে চিহ্নিত না করা হয়, তাহলে এমন দুর্ঘটনা আরোও হতে পারে। এই ব্যাপারে স্থানীয় প্রশাসন কোন ব্যবস্থা নেবে কি?
কে.এম.কুতুব উদ্দিন: এই নদীতে এই ধরনের অনেকগুলো গর্ত আছে। পাশা-পাশি বলদিয়াপাড়া ব্রীজের সামনে অনেক বড় একটা গর্ত আছে, যেখানে এখনো প্রায় পঁচিশ ফিটের উর্ধ্বে পানি। আসলে এই গর্তগুলোর জন্যে ব্যবস্থা নেবার কিছু নাই। বন্যার পানিতে বালি আসবে, বালি এসে, এগুলো ভরাট করে দেবে। নদীর স্রোতে আবার সেখানে পাঁক সৃষ্টি হবে, আবার সেটা গর্তে পরিণত হবে।
বীরগঞ্জ নিউজ ২৪: বন্যার পানিতে ভরাট থাকার কারনে পানির নিচে থাকা গর্তগুলো চিহ্নিত করা যায় না। এলাকাবাসী দাবী করছে, সেই যায়গাগুলো চিহ্নিত করে স্থানীয় প্রশাসন যদি সেই জায়গাগুলোতে সতর্কীকরণ সাইনবোর্ড টানায় তাহলে ভালো হবে। কে.এম,কুতুব উদ্দিন: ইতিমধ্যেই ঐ স্থানগুলো চিহ্নিত করে এলাকাবাসী মাছ মারার জন্যে ঝাড় ফেলেছে। নিজেদের মাছ মারা ও রাখার স্বার্থেই ঐ জায়গাগুলো অনেক আগেই ঝাড় ফেলে নিরাপদ স্থানে পরিনত করছে মানুষজন।
বীরগঞ্জ নিউজ ২৪: সবাই না কেউ কেউ অভিযোগ করছেন, এখান থেকে বালি উত্তোলন করে বিক্রি করা হচ্ছে। অবশ্য তারা কেউ অভিযোগের প্রমাণ দিতে পারে নাই। এই ব্যাপারে আপনার কোন মতামত আছে কি?
কে.এম. কুতুব উদ্দিন: অভিযোগ মানুষ করতেই পারে, সত্যতা খুজে দেখার বিষয়, এখানে মন্তব্যের কিছু নাই। প্রকৃত বাস্তবতা, বালু বিক্রয়ের মতো কোন ধরনের ঘটনাই ঘটে নাই।
সর্বশেষ প্রশ্ন: দ্রুত গর্ত ভরাট আর সজীবের মৃতদেহ উদ্ধারের যায়গার ব্যাপারে এখন পর্যন্ত কি কোন কিছু ভেবেছে স্থানীয় প্রশাসন ?
কে.এম.কুতুব উদ্দিন: স্থানীয় প্রশাসন যেভাবে ভেবেছে, ঐ সব গর্তের যায়গাগুলোতে ঝাড়-টার ফেলে মোটামোটি চিহ্নত করা হয়েছে। বিশেষ করে মাছ মারার লোকজন সেখানে ঝার-জঙ্গল ফেলে সেই স্থানগুলো নিরাপদ ভাবে চিহ্নিত করেছে। যেকোন সময় সেখানে গেলেই বোঝা যাবে সেখানে গর্ত আছে।
বীরগঞ্জ নিউজ ২৪: ধন্যবাদ। ভালো থাকবেন।
কে.এম. কুতুব উদ্দিন: আপনাকেও ধন্যবাদ।
Facebook Comments